বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাদক দ্রব্যের ব্যবহার
আপনাদের এতদিন বিভিন্নভাবে জানার ইচ্ছা হয়েছে যে মাদকাশক্তি " কি?? আপনারা এতদিন বিভিন্নভাবে খোঁজ করেছেন কিন্তু এটির সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি পাননি। আপনারা এটি সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছেন, বিভিন্ন বই পড়েছেন এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়েও দেখেছেন। কিন্তু এর সম্পর্কে
বিভিন্ন তথ্য জানতে পারেননি। আজকে আপনারা আর্টিকেলতটির মধ্যে " মাদকাশক্তি " নিয়ে সকল ধরনের তথ্য পেয়ে যাবেন। আপনারা যে সকল তথ্য এখনো জানেননি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা সকল ধরনের তথ্য পেয়ে যাবেন। এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা " মাদকাশক্তি "নিয়ে আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন।
ভূমিকা :
মাদকাসক্তি নামক এই ছোট অথচ ভয়ংকর শব্দটি বর্তমান বিশ্বে বিশেষ করে আমাদের যুব সমাজের জন্য আরও ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে মানুষ এই নেশার জালে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। এই নেশারই নাম মাদকাসক্তি। মাদকদ্রব্য এমন একটি দ্রব্য যা সেবন করলে একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পরিণত হয়ে যেতে পারে স্থায়িত্ব যতক্ষণ পর্যন্ত ঈঊ দ্রব্যের নেশা দেশের ।
মধ্যে থাকে। তবুও মানুষ যুগ যুগ ধরে এই নেশায় আক্রান্ত। এই নেশায় আক্রান্ত ব্যক্তি সহজে নেশা কাটিয়ে উঠতে পারে না। তার জীবনে নেমে আসে দূর্দিন নেমে আসা অন্ধকার। আপনারা কি জানেন মাদকাসক্তি বা মাদকাসক্তি ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি? আপনারা আরো জানেন যে মাদক সেবনের প্রভাব কি এবং এটার যে বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আপনাদের অজানা সকল তথ্যটি পেয়ে যাবেন এ আর্টিকেলটির মাধ্যমে ।
এই আর্টিকেলটির মধ্যে আপনারা যা যা পাবেন :মাদকাসক্তি কি।মাদকাসক্তির ক্ষতিকর দিক?মাদকাসক্তির প্রভাব?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাদক দ্রব্যের ব্যবহার ব্যবহার
- মাদক দ্রব্যের ধরন বা প্রকার
- মাদক সেবনের কারণ
- মাদকের উৎসভূমি
- মাদকের নেশা দ্রুত প্রসারের কারণ
- মাদকাসক্তি প্রতিরোধ চিন্তা
- আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা
- আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্তব্য।
- মাদকাসক্তি প্রতিকার
বিভিন্ন নেশা দ্রব্য গ্রহণ করে নেশা করার প্রবণতায় মাদকাসক্তি। নেশা ক্ষণিকের জন্য মনের যন্ত্রণা লাঘব করে, সকল বেদনা রেহাই পেতে সাহায্য করে, নেশার ফলে বাস্তব চৈতন্যকে অবলুপ্ত করে তাকে নিয়ে যায় এক স্বতন্ত্র জগতে এসব বিশ্বাস থেকে মাদকাসক্তির বিকাশ। মাদকদ্রব্য হিসেবে বহু উপকরণ রয়েছে। যেমন: মদ গাঁজা ভাং আফিম মারিজুয়ানা চরস প্যাথডিন ফেনসিডিল ইত্যাদি। সাম্প্রতিকালে হিরোইনের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবনের হতাশা ব্যর্থতা বিষাদ কৌতুহল এসব থেকেই নেশা গ্রহণের সূত্রপাত ঘটে এবং জীবনের অস্থিরতা নৈতিক মূল্যবোধের অভাব, সঙ্গ দোষ, কালো টাকার উত্তাপ ও ব্যয়ের অপরিচ্ছন্ন পন্থা যুব সমাজের বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
মাদকাসক্তির ক্ষতিকর দিক
মাদকদ্রব্য গ্রহণের আসক্তি সুপাচীন কাল থেকে প্রচলিত থেকে যুগে যুগে সমস্যার সৃষ্টি করছে। এক সময় চীন দেশের লোকজন আফিম খেয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সাম্প্রতিককালে মাদকাসক্তির প্রভাবে বহুলোকের বিশেষত যুবসমাজের ধ্বংস নেমে আসছে, শুরু হয়েছে এক ভয়াবহ অবক্ষয়ের। বিভিন্ন রকম দৈহিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে দেহের অক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মাদকাসক্তির ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন্যতার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন চেতনা নাশক মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে মানসিক আচ্ছনতা দেহের মাংসপেশির কম্পন ও মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। ফলে মাদকাসক্তির পরিণাম হিসেবে ব্যক্তিজীবনে আসে ব্যর্থতা এবং জাতীয় জীবনে আসে সর্বনাশ।
মাদকাসক্তির প্রভাব
সারা বিশ্ব জুড়ে মাদকাশক্তি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক উন্নত দেশে মাদকাসক্তির ব্যাপকতা জাতির জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। এই সর্বনাশা নেশা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মাদকদ্রব্যের প্রসারের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সর্বনাম নেশায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তরুণ সমাজের মধ্যে এর সম্প্রসারণের প্রবণতা খুব বেশি। শিক্ষাজীবনের অনিশ্চয়তা, বেকারত্বের অভিশাপ, দারিদ্রের গ্রাস এসব কারণে যুবসমাজ ক্রমেই নেশার দিকে ধাবিত হচ্ছে। নেশাগ্রস্তদের নৈতিক মূল্যবোধের অভাবের কারণে তারা অন্যায় ও অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের দাম বেশি হওয়ায় নেশাগ্রস্তরা অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনে তৎপর হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের ব্যাপক ব্যবহারের প্রেক্ষিতে এবং ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সহজেই ধারণ করা যায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার
উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ন্যায় আমাদের দেশেও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের যুবসমাজ মারাত্মকভাবে মাদকাসক্তির শিকার বাংলাদেশে কী পরিমাণ মাদকদ্রব্য ব্যবহার করা হয় এবং কত লোক মাদকাসক্ত তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান এখনো নেই। তবে এদেশে মোট জনসংখ্যার ১৭ ভাগ মাদকদ্রব্য ব্যবহার করে বলে বিশেষজ্ঞ ধারণা। দেশে ৩৫০টি বৈধ গাজার দোকান আছে। দর্শনার রয়েছে সরকার অনুমোদিত একমাত্র মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কেরু এন্ড কোম্পানি। বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেশীয় মদ প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন ও বিক্রি হয়।
মাদকদ্রব্যের ব্যবহার
আজকাল মাদকদ্রব্য বিভিন্নভাবে সেবন বা গ্রহণ করা হয়। এক ধরণের মাদক আছে যা নাকে টানা হয়। আবার কোনো দ্রব্য ধোয়ার সাথে পান করা হয়। কোনটি গিলে খাওয়া হয়। আবার কোনটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ১৫ লক্ষের মতো মাদক সেবনকারী রয়েছে এবং এর সংখ্যা দিন দিন আরও বাড়ছে। বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও নেশায় আক্রান্ত হছে।
মাদকদ্রব্যের ধরণ বা প্রকার
বর্তমানে বিশ্বে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য চালু রয়েছে। মদ, গাঁজা, ভাং, আফিম ইত্যাদি অনেক প্রাচীনকালের। বর্তমানের হেরোইন, মারিজুয়ানা, এল.এস.ডি, হাসিস, কোকেন, প্যাথিড্রিন, ফেনসিডিল ইত্যাদি বেশি প্রচলিত। এ পর্যন্ত যেসব মাদকদ্রব্যের কথা জানা গেছে তার মধ্যে নারকাটকসই প্রধান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে হেরোইন সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টিকারী মাদকদ্রব্য। অন্যান্য মাদকদ্রব্যের চেয়ে এর দাম তুলনামূলক বেশি এবং নেশায় আক্রান্ত করে গভীরভাবে।
মাদক সেবনের কারণ:
সাময়িক জীবনের প্রতি বিমুখতা ও নেতিবাচক মনোভাব থেকেই মাদকাসক্তির জন্ম। অভ্যাস থেকে আসক্তি, ধূমপান একদিন পরিণত হয়। হেরোইন আসক্তিতে ধনতান্ত্রিক সমাজে ও অর্থনীতিতে ব্যক্তির ভোগের উপকরণ অবাধ ও প্রচুর। বর্তমানে সিনেমা ও টেলিভিশনে যেসব অশ্লীল নৃত্য, ছবি, কাহিনী ইত্যাদি দেখানো হচ্ছে সেসব অনুকরণ করতে গিয়ে তরুণ সমাজ তাদের নৈতিক অধঃপতন ডেকে আনছে। তাছাড়া আবার অনেকসময় অস্থিরতা, কুচিন্তা, অভাব অনটন, পারিবারিক কলহের কারণে তরুণ সমাজ এই মোহের জালে আচ্ছন্ন হয়।
মাদকের উৎসভূমি:
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল (লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড), গোল্ডেণ ক্রিসেন্ট (আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তান)। গোল্ডেন ওয়েজ হেরোইনের মূল উৎস। মাদকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হলো আফিম। পপি ফুলের নির্যাস থেলে কৃষকরা তৈরি করেন কাচা আফিম। তা থেকে হয় মারফিন বেস। আফিম থেকেই তৈরি হয় সর্বনাশা হেরোইন। প্রাপ্ত তথ্যমতে যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, জ্যামাইকা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ের, ঘানা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে মারিজুয়ানা উৎপন্ন হয়। হাশিস উৎপন্ন করার জন্য জ্যামাইকা, মরক্কো, জর্দান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত ও নেপাল সমধিক পরিচিত।
মাদকের নেশা দ্রুত প্রসারের কারণ
সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ক্ষেত্রে হতাশা ও দুঃখবোধ থেকে সাময়িক শান্তিলাভের আশা থেকেই এই মারাত্মক নেশা ক্রমবিস্তার লাভ করছে। পাশাপাশি এ কথাও সত্য যে, অনেক দেশে বিপথগামী মানুষ ও বহুজাতিক সংস্থা উৎকট অর্থলালসায় বেছে নিয়েছে রমরমা মাদক ব্যবসায়ের পথ। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে বিভিন্ন দেশের মাফিয়া চক্র। মাদকের ঐ কারবারিরা সারা বিশ্বে তাদের ব্যবসায়িক ও হীনস্বার্থ রক্ষায় এই নেশা পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
মাদকাসক্তি প্রতিরোধ চিন্তা
বিশ্বজুড়ে যে মাদকবিষ ছড়িয়ে পড়েছে তার থাবা থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ভাবছেন। সমাজসেবীরা উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দেশে দেশে নানা সংস্থা ও সংগঠণ মাদকবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। বেতার, টিভি, সংবাদপত্র ইত্যাদি গণমাধ্যম মাদকবিরোধী জনমত গঠণে সক্রিয় হয়েছে।
আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা
সবচ্যে গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব হচ্ছে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগকারী সংস্থা তথা সরকারের। কেননা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, অপরাধ প্রবণতা দমন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাই সরকারের প্রধান দ্বায়িত্ব। শক্ত হাতে মাদকাসক্তির মতো অন্যতম অপরাধ দমন করতে সরকারকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্তব্য
বিশ্বের সকল দেশের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। এর উৎপাদন, বিপনন ও পাচার রোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে সচেতন হতে হবে। তাহলে এ ব্যবস্থার উত্তোরণ অনেকাংশে সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। এজন্য সকল দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সজাগ থেকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
মাদকাসক্তির প্রতিকার
মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণাম থেকে বর্তমান সময় ও মানুষকে বাঁচাতে হলে এই ভয়াল ব্যাধির বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেকারত্বের অভিশাপ মানুষকে মাদকাসক্ত করে।, তরুণদের কর্মসংস্থান করলে তারা কর্মময় জীবনযাপন করবে। শিক্ষার যথার্থ প্রসার ঘটলে, মানুষের নৈতিক জ্ঞান অর্জিত হলে নেশাগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা কমবে। সবচেয়ে বড় কথা, মাদকাসক্তদের যেমন নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা জরুরি তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি মাদকব্যবসায়ীদের আইনানুকভাবে শাস্তি দেওয়া। বাংলাদেশে কোনো মাদক ব্যবসায়ী বা চোরাকারবারীর উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে এমন তথ্য আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আপনার আর্টিকেলটি থেকে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারলেন।আশা করি আপনাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। যদি আপনাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বেশি বেশি করে পড়বেন এবং শেয়ার করতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url